জাতীয় পরিচয়পত্র বা National identity card হচ্ছে এমন একটি ব্যক্তিগত ডকুমেন্ট যা ব্যক্তির নাগরিকত্বের প্রমাণ বহন করে। বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য এটি একটি বাধ্যতামূলক নথি। বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি সেবা গ্রহন সহ রাষ্ট্রের সুযোগ সুবিধা পেতে হলে NID Card প্রয়োজন হয়।

একজন বাংলাদেশী ১৬ বছর বয়সে আইডি কার্ডের জন্য নিবন্ধন করতে পারে এবং ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর ভোটার তাকিকায় নথিভুক্ত হয়। বর্তমানে ভোটার নিবন্ধন, আইডি কার্ড বিতরণ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অধিনে থাকলেও পরবর্তী সময়ে এই দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের হাতে থাকবে।

জাতীয় পরিচয় পত্র ও এনআইডি কার্ডের ইতিহাস

জাতীয় পরিচয় পত্র বা NID কার্ডের প্রচলন সর্বপ্রথম ১৯৯০ সালের মাঝামাঝি সময় শুরু হয়। তবে আঙ্গুলের ছাপ সম্বলিত বায়োমেট্রিক তথ্য সহ National identity card বিতরণ হয় ২০০৮ সালে। আইডি কার্ডের নিবন্ধন এবং বিতরনের দায়িত্বে ছিলো NIDW বা জাতীয় পরিচয় উইং। বর্তমানে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের Services nidw gov bd ওয়েব পোরটালের মাধহমে জাতীয় পরিচয় পত্র সেবা প্রদান করা হয়।

প্রথম দিকের সব এনআইডি কার্ড কাগজে ছাপানো লেমেনেটিং করা ছিলো। বর্তমান সময়েও যে সব এলাকায় Smart NID Card বিতরণ করা হয়নি তাদের লেমেনেটিং আইডি কার্ড ব্যবহার করতে হচ্ছে। তবে খুব শিগ্রই ধাপে ধাপে সবাইকে স্মার্ট আইডি কার্ডে আওতায় নিয়ে আসা হবে।

জাতীয় পরিচয় পত্র
জাতীয় পরিচয় পত্র

Smart NID Card

জাতীয় পরিচয় পত্র ও আইডি কার্ডের স্মার্ট এবং আপডেট সংস্করণ হচ্ছে Smart nid card. সাধারণ জাতীয় পরিচয় পত্রের সিমাবদ্ধতা থেকে বের হয়ে বেশি তথ্য সমৃদ্ধ, ডিজিটাল ও স্মার্ট পরিচয় বহন কারি নথি হিসেবে স্মার্ট আইডি কার্ড চালু করা হয়।

স্মার্ট জাতীয় পরিচয় পত্র সিমের মতো মাইক্রো চিপে ব্যক্তি সম্পর্কে ৩২টি বায়োমেট্রিক তথ্য এবং সনাক্ততকারি তথ্য সংরক্ষন করে। ব্যক্তির ২ হাতের ১০ আঙ্গুলের ছাপ, চোখের রেটিনার তথ্য (প্যাটার্ন), ছবি ও ডিজিটাল স্বাক্ষর এই Smart NID Card এ সংরক্ষিত থাকে।

স্মার্ট কার্ড ব্যাবহারে ফলে নাগরিক সেবা অনেক সহজ এবং দ্রুত হয়েছে। চিপ থাকের কারনে ম্যানুয়ালি চেকিং এর পরিবর্তে মেশিনের মাধ্যমে আইডি কার্ডের যাচাই করা যায়। স্মার্ট কার্ডে Micro Chip থাকার ফলে প্রযুক্তি ব্যাবহার করে নিমিষই সকল তথ্য বের করা যায়।

Smart NID Card
Smart NID Card

বর্তমানে ভোটার নিবন্ধন করার প্রক্রিয়া অনলাইন করা হয়েছে। ১৮ বছর পূর্ণ হলে নিজে নিজে অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন করে আইডি কার্ডের আবেদন করতে পারবেন। আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অনলাইনে চলে আসলে অনলাইন থেকে ফ্রিতে NID Card Download করতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজনীয়তা

একটি রাষ্ট্রের নাগরিক সুবিধা ও সেবা গ্রহনের জন্য নাগরিকত্বের প্রমান প্রয়োজন হয়। সরকারি কিংবা বেসরকারি সেবা পেতে হলে তাকে অবশ্যই আইডি কার্ডধারী হতে হবে। ব্যঙ্কিং থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আমারা প্রতিনিতত যে সব কাজে এনআআইডি কার্ড বা Bangladeshi national identity card ব্যবহার করি তার একটি ছোট তালিকা তৈরি করা হলো-

  • ব্যংক একাউন্ট খোলতে
  • পাসপোর্ট আবেদন করতে
  • সিম (SIM) কার্ড রেজিস্ট্রেশন
  • মোবাইল ব্যংকিং চালু করতে
  • চাকরির আবেদন
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স
  • ট্রেড লাইসেন্স
  • ভোট প্রদানে
  • জমি ক্রয় অথবা বিক্রয়
  • সরকারি ভাতা

উপরে উল্লখিত ক্ষেত্র ছাড়াও অনেক কাজে NID Card প্রয়োজন হয়। নাগরিক সনদ কিংবা চারিত্রিক সনদ পেতে হলেও থাকতে হয় জাতীয় পরিচয় পত্র। এক কথায় বলতে গেলে একজন নাগরিক দেশের মধ্যে বসবাস করতে হলে প্রায় সকল কাজেই ভোটার আইডি প্রয়োজন হবে। ভোটার নিবন্ধন হবার মতো বয়স হলে অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য নিবন্ধন করুন।

FAQ’s

জাতীয় পরিচয় পত্র কি?

জাতীয় পরিচয় পত্র হলো একজন বাংলাদেশীর এদেশের নাগরিকত্বের বৈধ ও সাংবিধানিক প্রমাণপত্র

NID Card কবে চালু করা হয়?

NID কার্ডের প্রচলন সর্বপ্রথম ১৯৯০ সালের মাঝামাঝি সময় শুরু হয় (উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে)

কত বছর বয়সে জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করা যায়?

সাধারণত ১৬ বছর বয়স হলেই অনলাইনে আইডি কার্ডের জন্য নবন্ধন করতে পারে। তবে তার ভোটার তালিকায় নাম আসতে ১৮ বছর পূর্ণ হতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 Comments

  1. আমার NID কার্ড পিতার নাম সংশোধন হয়েছে